সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) ২০১৭ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর গত ৩ বছরে ৯ হাজার ৪৫৩ জন বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের অনেকেই গেছেন দেশের বাইরে। কর্তৃপক্ষ বলছেন, বর্তমানে বেকারত্ব দূরীকরণ ও আত্মনির্ভরশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে বিদেশ গমনেচ্ছু ও বেকার যুবকদের আত্মনির্ভরশীল করছে সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। ১৪৪ আসন সম্বলিত চারতলা ডরমেটরি ভবন দূর-দূরান্তের প্রশিক্ষণার্থীদের আসাসিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করছে।

তারা আরও জানায়, অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সমৃদ্ধ ল্যাব এবং ইন্ডস্ট্রিয়াল সেলাই মেশিনের গার্মেন্টস ওয়ার্কশপে সকাল-বিকাল চলছে প্রশিক্ষণ। অত্যাধুনিক আর্ক ওয়েল্ডিং মেশিনসহ বুথ সমৃদ্ধ ওয়ার্কশপেও রয়েছে প্রশিক্ষণার্থীদের ভিড়। ড্রাইভিং ও গাড়ির ইঞ্জিনের কাজ শিখতে সবাই মাঠে বসে অপেক্ষা করেন সিরিয়ালের জন্য।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার রোজিনা খাতুন, মুনজিতপুরের রেহেনা পারভীন, পুরাতন সাতক্ষীরার ঘোষ পাড়া এলাকার সুমাইয়া রেজওয়ানা ও তালা উপজেলার নগরঘাটা গ্রামের ইনজামুল ইসলাম রনি জানান, ইতোপূর্বে অনেক খরচ করে ট্রেনিংয়ের জন্য ঢাকায় যেতে হলেও এখন ঘরে বসেই সেসব সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ট্রেডে এখান থেকেই এখন ট্রেনিং নেওয়া যাচ্ছে।

নারীরা আরও জানান, ছয় ও তিন মাসের বিভিন্ন বিষয়ে কোর্সসহ চলছে জাপানি কোরিয়ান ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা। নারীদের মাসব্যাপী হাউস কিপিং চলায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ গড়ার কারিগরি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এই টিটিসি।

সাতক্ষীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর মোহাম্মদ আনারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে শিক্ষা নিয়ে সরকারিভাবে বিদেশ যেতে পারলে যেমন আত্মনির্ভরশীন হবে, তেমনি দেশের জন্য রেমিট্যান্স আসবে।

টিটিসি’র জাপানি ভাষা প্রশিক্ষক মোহাম্মদ শাহাদ উল্যাহ বলেন, সকালে ও বিকালে একাধিক কোর্স চালুর পাশাপাশি বিকালের ৫টি কোর্সে ভর্তি ফ্রি ও শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার জন্য ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ১০০ টাকা হারে হাজিরার ভিত্তিতে ভাতা দেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির জব প্লেসমেন্ট কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরার প্রেক্ষাপটে কৃষি নির্ভর ও সিভিল কনস্ট্রাকশন ট্রেড দুটির চাহিদা রয়েছে। এটা চালু হলে একজন দক্ষ কর্মীকে বিদেশ পাঠানোর পথ আরও সুগম হবে।

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বিনেরপোতায় একাধিক বিশাল ভবনে মনোরম পরিবেশে করোনার পর আবারও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পদচারণায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। ৭৮টি পদের বিপরীতে ডেপুটেশনে ৩ জন এবং বিভিন্ন প্রকল্পের ১৭ জন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত রয়েছেন।

তারা সাড়ে ৪ শতাধিক প্রশিক্ষার্থীকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার কাজ করে চলেছেন। দেশের ভেতরে ও বাইরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে আত্মপ্রত্যয়ে বলিয়ান হতে চান এখানকার প্রশিক্ষণার্থী বেকার তরুণরা। তাদের ভরসার আশ্রয়স্থলে পরিণত হতে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি।

 

কলমকথা / সাথী